ওয়াজেদুল হক মণি,
মহান বিজয় দিবস সামনে রেখে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলা ভবন, হাসপাতাল, থানা, পৌরসভা ও ইউএনও কার্যালয় আলোকসজ্জায় সেজেছে উৎসবের রঙে। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা গেছে শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ‘আগুনের পরশমণি’তে যেখানে এখনো লাগেনি কোনো আলোর ছোঁয়া, নেই বিশেষ কোনো সজ্জা।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সারাদেশের মতো এ উপজেলাতেও শুরু হয়েছে উৎসবের প্রস্তুতি। সরকারি ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন ও রঙিন বাতির আলোয় উদ্ভাসিত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্থাপনাগুলো যেন রয়ে গেছে উপেক্ষিত।
স্থানীয় শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘আগুনের পরশমণি’তে আলোকসজ্জার কোনো ব্যবস্থা এখনো করা হয়নি, যা দিবসের কেন্দ্রীয় চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন নাগরিকরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ আলোকিত না থাকা আমাদের মূল চেতনার প্রতি অবিচার। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছি স্বাধীনতা, তাদের স্মরণে প্রথম আলোকিত হওয়া উচিত ছিল এই স্থানগুলো।”
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দিবসটি উপলক্ষে র্যালি, সমবেত সঙ্গীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণীর প্রস্তুতি প্রায় শেষ। তবে শহীদ মিনার ও স্মারকে আলোকসজ্জার
স্থানীয় তরুণ নুরুল আবছার বলেন, “প্রতিবছর আমরা দেখি, সরকারি ভবনগুলো আলোয় ঝলমল করে, কিন্তু শহীদ মিনার অন্ধকারে ঢাকা থাকে। এই বৈষম্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে দুর্বল করে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান মাহমুদ ডালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কাজ চলছে। শহীদ মিনার ও আগুনের পরশমণিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে রাত পোহালেই মহেশখালীবাসী সেখানে শ্রদ্ধা জানাবেন।
স্থানীয় সুশীল সমাজ ও যুব সংগঠনগুলো দাবি জানিয়েছে, শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই স্থাপনাগুলোকে আলোকিত করা হোক এবং আগামী বছর থেকে যেন এই অবহেলা না ঘটে।
বিজয় দিবসের মূল চেতনা শহীদ স্মরণে, তাই এর কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।