
মহেশখালী প্রতিনিধি ::
মহেশখালীর কালারমারছড়ার ঝাপুয়া এলাকায় অবস্থিত নারী শিক্ষার অগ্রদূত আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদরাসা দুই দশকের গৌরবময় পথচলা পূর্ণ করল। নারীর জ্ঞানচর্চা, নৈতিকতা গঠন ও আত্মমর্যাদা বিকাশে নিরলস ভূমিকা রেখে প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণ করল তার প্রতিষ্ঠার ২০ বছর। এ উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন ও ‘আল-ঈমান স্মারক–২’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মজুমদার, মহেশখালীর কৃতি সন্তান ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু হাশেম এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। এছাড়াও স্থানীয় আলেম-ওলামা, শিক্ষানুরাগী, অভিভাবক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ বিপুলসংখ্যক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, “নারী শিক্ষার অগ্রগতি ছাড়া কোনো জাতির টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক জ্ঞানচর্চার সমন্বয়ই পারে একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে।” তিনি আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদরাসার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠান শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এখান থেকে নৈতিকতাসম্পন্ন, সচেতন ও দেশপ্রেমিক নারী প্রজন্ম গড়ে উঠছে—যারা ভবিষ্যতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে আলোকিত করবে।
বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যেও উঠে আসে নারী শিক্ষার গুরুত্ব, দ্বীনি মূল্যবোধে আলোকিত সমাজ বিনির্মাণ এবং গ্রামবাংলায় মেয়েদের শিক্ষায় আল-ঈমান মাদরাসার অনন্য অবদানের কথা। বক্তারা বলেন, এই মাদরাসা মহেশখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকেও নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অনুসরণযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
অনুষ্ঠানের এক আবেগঘন পর্বে প্রতিষ্ঠানের দুই দশকের স্মৃতি, সংগ্রাম ও অর্জনের দলিল হিসেবে প্রকাশিত ‘আল-ঈমান স্মারক–২’ এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ সময় প্রাঙ্গণজুড়ে সৃষ্টি হয় আনন্দঘন পরিবেশ। দোয়া মাহফিল, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
বিশ বছরের সফল পথচলার পরও আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদরাসা তার অঙ্গীকারে অটল—জ্ঞানই আলো, শিক্ষাই মুক্তি। আগামীতেও নারী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে মানবিক ও নৈতিক সমাজ গঠনে প্রতিষ্ঠানটি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে—এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেন বক্তারা।


